পৃথিবীর অমীমাংসিত রহস্য !

১. টাওস হোম

টাওস হোম হচ্ছে নিউ মেক্সিকোর একটি ছোট শহর। সেই শহরে প্রায়ই ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের শব্দেরমতো শব্দ শোনা যায়।জানা যায় এই শব্দে অনেক মানুষ পাগল হয়ে গেছেন। এই শব্দটি শুধু খোলাকানেই শোনা যায়, কিন্তু কোন শব্দ শনাক্তকারী ডিভাইসের মাধ্যমে এই শব্দ শোনা যায় না। এমনকিতোমরা জেনে অবাক হবে এখন অব্দি কেউই কোথা থেকে এই শব্দের উৎপত্তি- তা শনাক্ত করতেপারেনি।

২. ভয়নিখ ম্যানু্স্ক্রীপ্ট

ভয়নিখ ম্যানুস্ক্রীপ্ট  লিখা হয়েছে ভ্যালুমের (পশুর চামড়া) উপর ১৫০০ শতাব্দীতে। অজানা ভাষায়লিখিত বইটির মাত্র ২৪০ টি পৃষ্ঠা পাওয়া গিয়েছে,আরো অনেক পৃষ্ঠাই হারিয়ে গিয়েছে। বইটিতে রয়েছেঅসংখ্য ডায়াগ্রাম,ইলাস্ট্রেশন এবং কোড। এবং বইটিতে লেখাগুলো বাম দিক থেকে ডান দিকে লেখাহয়েছে।

ভয়নিখ ম্যানুস্ক্রীপ্ট পড়েছেন অসংখ্য প্রফেশনাল ক্রীপ্টোগ্রাফার এবং আমেরিকা ও ব্রিটেনের অসংখ্যজনপ্রিয় কোডব্রেকাররা। যাদের কেউই অজানা ভাষায় মুদ্রিত এই বইয়ের লেখা, ডায়াগ্রাম, কোড, ইলাসস্ট্রেশনের সমাধান করতে পারেননি এবং এখন পর্যন্ত বইটি জনপ্রিয় একটি রহস্য হিসেবে রয়েগেছে ক্রীপ্টোগ্রাফারদের নিকট।

৩. জ্যাক দ্য রিপার

জ্যাক দ্য রিপারের নাম হয়তো আমরা বিভিন্ন বই এবং মুভিতে শুনেছি কিন্তু জ্যাক আসলে কে ছিলেন-ইতিহাস সেই রহস্যের উন্মোচন আজও করতে পারে নি। জ্যাক ছিলেন একজন সিরিয়াল কিলার, যিনি কিনা ১৮০০ শতাব্দীতে লন্ডনের প্রাচ্যদেশের ১১ জন মহিলাকে খুন করেছিলেন, যাদের প্রত্যকেরদেহই বিকৃত অবস্থায় খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু এই খুনীর আসল পরিচয় পাওয়া যায়নি এবং তাকেওকখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

৪. বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল

সমুদ্রের এই অদ্ভুত ব্যাসটি রয়েছে মিয়ামি, বারমুডা এবং পুয়ের্টোরিকোর মাঝামাঝিতে। পাইলটেরা এইব্যাসের মাঝামাঝিতে চলাচলের সময় অত্যন্ত উত্তেজিত থাকেন। অসংখ্য জাহাজ এই বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলে হারিয়ে গিয়েছে। এক ধরনের অজানা বাষ্পীয় বুদবুদ নিঃসরিত হয় এই জায়গা থেকে। আর এই অদ্ভুতঘটনার কারণ সম্পর্কে কোন সমাধান বের করতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। কেন এত জাহাজ এই জায়গায়হারিয়ে গিয়েছে, সেগুলো কই আছে তাও জানা যায়নি, এমনকি জাহাজগুলোর কোন অবস্থান ও নিশ্চিতকরা যায়নি।

৫. ক্রীপ্টস

ল্যাংলি, ভার্জিনিয়াতে CIA- এর হেডকোয়ার্টারের বাইরে দেখতে পাবে একটা শিলারুপ, যার উপরিতল নানান কোডেড ইন্সক্রিপশন করা। এই চিত্তাকর্ষক ভাস্কর্য তৈরি করেছেন জিম সানবরন, তিনি বুঝাতে চেয়েছেনসবকিছুই সমাধান এবং  রহস্যোদ্ধার করা সম্ভব কোড এবং সংকেত ব্যবহার করে। দেয়ালের গায়ে চারটি ইনস্ক্রিপশন সেকশনের  মধ্যে তিনটির সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। দেয়ালের গায়ে নানান কোডেরসমাধান হয়েছে,কিন্তু চার নম্বর দেয়ালের ইনস্ক্রিপশন সমাধান করা সম্ভব হয়নি। CIA এর কোনমেধাবীও এই চার নম্বর সেকশনের সমাধান করতে পারেনি। এটি পৃথিবীর অন্যতম সমাধানহীন রহস্যেরমধ্যে একটি।

৬. সেপার্ডস মনুমেন্ট ইনস্ক্রিপশন :

ইংল্যান্ডের স্টার্ফোডশ্যায়ারে একটি ভাস্কর্য রয়েছে যা কিনা বুদ্ধিজীবীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিলো। সেভাস্কর্যে লিখিত ইনস্ক্রিপশন এবং একটি শব্দ DOUOSVAVVM , যার অর্থ এবং উদ্দেশ্য কোনটিরই কোনসমাধান পাওয়া যায়নি। সেপার্ড মনুমেন্টটি তৈরি করা হয়েছিলো ১৮০০ শতাব্দীতে এবং ওই মনুমেন্টেপাওয়া শব্দটির কোন সমাধান করা সম্ভব হয়নি।

৭. তামাম সউদ

১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে একজন অচেনা লোকের লাশ খুঁজে পাওয়া যায় সার্মমোটন সমুদ্রে, এইসমুদ্রটি অবস্থিত অস্ট্রেলিয়াতে। লোকটির শার্টের পকেটে একটি কাগজের টুকরা খুঁজে পাওয়াযায়, কাগজের ওই টুকরাটিতে লেখা ছিলো “Tamam Saud” – তামাম সউদ। যা অনুবাদ করলে হয়“সমাপ্ত” বা “শেষ“। রুবাইয়তের ওমার খৈয়ামের বিশেষজ্ঞদের চেষ্টায় শব্দটির অনুবাদ করা হয়। এরপরওই দেশের সরকারের শত প্রচেষ্টায় পরেও লোকটির কোন পরিচয় জানা যায়নি। এমনকি ইতিহাস তাকেএকজন রহস্যময় ব্যক্তি হিসেবেই পরিচিতি প্রদান করেছে।

৮. রাশিচক্র অক্ষর

১৯৬০ এবং ১৯৭০ দশকের দিকে একজন আসামির সন্ধান পাওয়া যায় স্যান ফ্রান্সিসকোর সমুদ্রএলাকাতে। তাকে রাশিচক্র খুনি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, কারণ তিনি রাশিচক্র ব্যবহার করে ভয়ানককিছু চিঠি পুলিশ এবং প্রেসে পাঠান। চারটি চিঠির একটি চিঠির রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছিলো। তার ব্যবহৃত রাশিচক্রের কারণ সম্পর্কে জানা গিয়েছিলো যা ছিলো খুবই আপত্তিকর এবং ভয়ংকর কিছুকারণ। কিন্তু বাকি তিনটি চিঠির  রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয় নি, সেই চিঠিতে ব্যবহৃত রাশিচক্রেরকোন সমাধান আজ অব্দিও হয়নি।

৯. জর্জিয়া গাইডস্টোন

রহস্যের চাদরে ঘেরা জর্জিয়া গাইডস্টোন অবস্থিত আলবার্টে। জর্জিয়া গাইডস্টোন দুর্গটি তৈরি হয়েছে১৯৭৯ সালে। দুর্গের দেয়ালে ১০টি নতুন প্রত্যাদেশ  লেখা হয়েছে। এই প্রত্যাদেশগুলো লেখা হয়েছেইংরেজি, হিন্দী, হিব্রু, আরবি, চায়নিজ, রাশিয়ান, স্প্যানিশ ভাষায়, কিন্তু কেন এবং কাদের জন্য এইপ্রত্যাদেশগুলো লেখা হয়েছে,সেই রহস্যের কোন সমাধান হয়নি।

১০. রংগরংগ

মোয়ায় অবস্থিত রহস্যময় পৃর্ব দ্বীপে খুঁজে পাওয়া যায় আধিভৌতিক প্রতীক সম্বলিত একটি কাঠের বাপাথরের টুকরার মতো অংশ যা রংগরংগ নামে পরিচিত। এই আধিভৌতিক প্রতীকগুলোর আজ পর্যন্তপাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। এই প্রতীকগুলো দিয়ে কী বুঝানো হয়েছে বা কী লিখা হয়েছে সেই রহস্যেরকোন সমাধান হয়নি আজ পর্যন্ত।

১১. দ্যা লচ নেস মনস্টার

বছরের পর বছর মানুষ শুনে এসেছে লচ নেস মনস্টার-এর ব্যাপারে এবং এখন পর্যন্ত অনেকেই ভেবেকিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়। এই মনস্টার আর সকল প্রাণীর মতোই সৃষ্ট একটি জীব। বহুবছর যাবতবিভিন্ন ভিডিও এবং ফুটেজ বারবার দেখে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেছে হয়তো এটা কোন সমুদ্রউপকূলীয় সাপ বা এরকম সমুদ্র প্রাণী হবে। এমনকি এখনো ভাবে লচ নেস মনস্টার এখনো আছে, এবংএরা সমুদ্রের নিচে পানিতে চলাচল করে। কিন্তু আসলে এই মনস্টারের ব্যাপারে রহস্যের কোন শেষনেই।

১২. বিগফুট

বিগফুট জীবটি বসবাস করে ইউনাইটেড স্টেট এবং কানাডার  বরফাচ্ছন্ন পাহাড়ি এলাকায়। প্রথমেএটাকে গরিলা ভাবা হতো। এই জীবটির পায়ের ছাপ একদম মানুষের পায়ের ছাপের মতো, কিন্তু এইজীবটির ব্যাপারে সঠিক এবং কার্যকরী কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। একটি জীব যার পায়ের ছাপ মানুষেরমতো, অথচ সে মানুষ বা গরিলা নয়, তাহলে, কী? এই রহস্যের সমাধান এখনো হয়নি।

১৩. ব্ল্যাক ডালিয়া মার্ডার

২২ বছর বয়সী এলিজাবেথ (যার কুচকুচে কালো চুলের জন্যে তিনি ব্ল্যাক ডালিয়া নামে খ্যাত ছিলেন) সেসময় শোবিজ জগতে নিজেকে তুলে ধরতে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। এমন সময় ব্ল্যাক ডালিয়াখুন হন। কে বা কারা তাকে খুন করেছিলেন, কেন খুন করেছিলেন সে ব্যাপারে অনেক অনুসন্ধানের পরওকোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।  ইতিহাসে ব্ল্যাক ডালিয়ার খুন অন্যতম একটি রহস্যময় খুন হিসেবে জায়গাকরে নিয়েছে।

১৪. স্টোনহেঞ্জ

স্টোনহেঞ্জ তার সমগ্র সৌন্দর্য এবং বিভ্রান্তিকর রহস্য নিয়ে অবস্থিত রয়েছে ইংল্যান্ডে। জায়গাটিতেঅনেক  পাথর একটার উপর আরেকটা  বসে,সুন্দরভাবে সজ্জিত রয়েছে। প্রতিটি পাথর প্রায় ছয় টন করেওজন। স্টোনহেঞ্জ এখন পর্যন্ত মানবসভ্যতার অত্যন্ত জনপ্রিয় রহস্য হিসেবেই রয়ে গেছে। অনেকের মতেএই স্থাপত্য হয়তো প্রকৃতির নিয়মে জমাট বেধে সৃষ্টি হয়েছে,অনেকে মনে করেন এটি হয়তো মানব সৃষ্টস্থাপত্য অথবা অনেকে ভাবেন হয়তো অন্য গ্রহের কোন প্রাণী এটা সৃষ্টি করেছেন। সেই আদি যুগেকীভাবে পাথরগুলো এভাবে সজ্জিত করা হয়েছিলো সেটার সমাধান আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

১৫.দ্যা লস্ট সিটি অফ আটলান্টিস

দ্যা লস্ট সিটি অফ আটলান্টিসকে কল্পনা করা হয় অত্যন্ত সুন্দর একটি শহর হিসেবে, যেখানে মারমেইডএবং মারমেইনরা বসবার করতো। কিন্তু এই শহর সমুদ্রের অতলে ডুবে যায়। কল্পনা করা হয় এইশহরটির অস্তিত্ব সত্যিই বাস্তবে ছিলো। সমুদ্রের নিচে হয়তো এই শহরের অবশিষ্টাংশ আছে,যা প্রমাণকরবে এই শহরের অতীত সৌন্দর্য। কিন্তু এই শহর নিয়ে জল্পনা কল্পনার কোন সঠিক সমাধান এখনপর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিঃসন্দেহে এই শহরটি রহস্যময় শহর হিসেবে জনমনে রয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.